,

বিএনপি নির্বাচনে যাবেই: খালেদা জিয়া

image-18

সময় ডেস্ক \ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে যাবেই। চাইলেও বিএনপিকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা যাবে না। তবে সে নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্র্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  মঙ্গলবার বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে তিনি সেখানে পৌঁছান। সমাবেশে সরকারের কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন খালেদা জিয়া। বলেন, চেষ্টা করেও তাদেরকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা যাবে না। আগামী জাতীয় নির্বাচন বিএনপিকে ছাড়া হবে না উলে­খ করে খালেদা জিয়া বলেন, ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন আর হবে না। আমাদের লোকদেরকে ধরবেন আর ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন করবেন এটা হবে না। বিএনপি বড় রাজনৈতিক দল। তাকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন হবে না। সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি বলেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন দিতে হবে। হাসিনার সংসদ বহাল রেখে এবং হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। তিনি বলেন, মানুষ বুঝে গেছে আওয়ামী লীগ আরও ক্ষমতায় থাকলে তারা আর বেঁচে থাকতে পারবে না। এ জন্য তারা চায় পরিবর্তন। খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনা মিথ্যাচার করছেন। সরকারি কর্মকর্তারাও মিথ্যা কথা বলছেন। তারা বলছেন যে (সমাবেশের) অনুমতি দেয়া হয়নি। এটা কেমন কথা? যদি অনুমতি না দেন তাহলে টাকা কেন নিলেন? আমাদের ছেলেপুলে কাল থেকে স্টেজ করল, সব কিছু করল কীভাবে? আওয়ামী লীগ সরকার আমলে পদ্মাসেতু নির্মাণ হলে তাতে কাউকে না উঠার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, পদ্মা সেতুর স্বপ্ন দেখাচ্ছে সরকার। কিন্তু পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের আমলে হবে না। এ সেতু জোড়াতালি দিয়ে বানানো হচ্ছে। বিএনপি নেত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ পুলিশকে দিয়ে অত্যাচার করাচ্ছে। পুলিশ খারাপ নয়। তারা জনগণের সেবক। কথায় কথায় আমাদের ছেলেদের ধরছে, এটা বন্ধ করতে হবে। জঙ্গিবাদের জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে তিনি বলেন, আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম, তখন আওয়ামী লীগই সৃষ্টি করেছে। শায়েখ আবদুর রহমান ও বাংলাভাই তাদের আত্মীয়স্বজন। তারা এখন ছেলেপুলেদের ধরছে আর বলা হচ্ছে এটা জঙ্গি বিদেশিদের দেখানোর জন্য। দুর্নীতির মামলায় আদালতে হাজিরার সময় একাধিক কার্যদিবসে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ নিয়েও কথা বলেন খালেদ জিয়া। তিনি বলেন, আমি যখন কোর্টে যাই, ছেলেরা শুধু শ্লোগান দেয়, তারা নিরপরাধ, তাদেরকে ধরা হচ্ছে, এটা বন্ধ করুন। ৭১ এ সহযোগিতা করায় ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, তারা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে। বন্ধু হিসেবে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই, এটা আমরা মনে রাখব। ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, আবদুল মঈন খান ও ছাত্রদলে সাবেক নেতারা বক্তব্য রাখেন। এর আগে গেট খুলতে না দেয়ায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিউশনের চত্বরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্রদল। বিকালে সেখানে স্থাপন করা অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য বক্তব্য দেন বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। পরে সমাবেশের জন্য ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউশন মিলনায়তন খুলে দেয়া হয়। এর আগে মঙ্গলবার বিকালে ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমাবেশের অনুমতি থাকলেও মিলনায়তনের গেইট বন্ধ থাকায় ভেতরে ঢুকতে পারেননি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তাই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট চত্বরে দুপুর থেকে বিক্ষোভ করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। প্রায় একমাস আগে অনুমতি নেয়া হলেও মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ করে নিরাপত্তার কথা বলে অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে কর্তৃপক্ষ ছাত্রদলের নেতাদের জানান। পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানিয়ে প্রশাসনের কাছে নির্বিঘেন সমাবেশ করতে সহযোগিতা কামনা করেন। এদিকে বেলা ১১টার পর থেকেই ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা মিছিলসহ অনুষ্ঠানস্থলে আসতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।


     এই বিভাগের আরো খবর